বসন্ত ও বিশল্যকরণী
তন্ময় বীর
ডাক দেওয়ার আগেই শীতরুক্ষ
দধীচি আঙুলে জেগে ওঠে
অব্যর্থ কচি নিমপাতা।
নিমগ্ন শব্দজীবী
ছন্দলেখে প্লুত,
এখনও হৃদয়
হাতড়ে ফেরে পেলবতা।
বসন্ত নির্ঘোষ কত
মাঝপথে থেমে আছে অনাথ
কূলহীন নিথর অহল্যা।
সচকিত করে চপল মধুমাস
অসমাপ্ত চুম্বনে চলে গেছে।
নিষ্ঠুর নির্মম অবহেলায়
নির্বোধ গর্ধভের পায়ে
রাধাচূড়া ঝরেছে
ময়দানের ঘাসে অবিরাম ।
কৃষ্ণচূড়া হাতে নিয়ে কবে
মনে হয়েছিল তিমির তিমির
হননের গান;
ট্র্যাডিশন সমান
চলে;
এই যে অঞ্জলি
শষ্পে পড়ে অবারিত
নির্বাক হরিণ বস্ত্রের মতো
লুঠ হতে হতে লুঠ হতে হতে
ক্লান্ত বিস্রস্ত বিবশা
শুয়ে আছে যেন নিশ্চিত।
বসন্তের ছোঁয়াচে অকাল শিং
রাত্রির গাঢ় মদে
জন্মদেশে অপ্রতিরোধ্য
শিহরণ
তোলে জেনে পূর্বাহ্নে
তৃতীয় নেত্রে বসন্তসেনার
উদ্যত সদণ্ড শাসন।
চূতমঞ্জরী মায় মালতী
মল্লিকা
টবের সম্পদ তারা কতটা চেনে
রঙিন বসনপ্রান্ত।
উদাসী বাঁশিতে নেই
নাগরিক উদগ্র উচ্ছ্বাস, এখানে
প্রত্যহ ফোটে চিরবসন্ত ।
কী কী হারিয়ে গেল
তার তালিকা করি
যারা আর কুহুস্বর শুনবে না
তাদেরও এপিটাফ লিখি।
কোকিল কি তেমন আছে
বসন্তবিলাপ, পুষ্করিণী
ভীমা?
ভুয়ো পলাশি আগুনে
সত্যি ফাগুন পুড়ে যাচ্ছে
কেউ কাঁদছে না!
সময়ের জাদুঘরে
ক্যলেন্ডারের নির্ভুল
খাঁচায়
সোনালি কফিনে বন্ধি
সকরুণ বাসন্তিক লাশ
একহাতে বিশল্যকরণী যার
অন্য হাতে বিনাশী অভিসন্ধি
আত্মসচেতন বিমূঢ়
জন্মযুবকের
জন্য দু-মিনিট নীরবতা ..
নিরাময় হাতে নিয়ে
খেতে ভুলে যায়
যে অস্বীকার
করে সব সতর্কতা।
Comments
Post a Comment